প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস সারা বিশ্বে বাংলাদেশের একটি বড় ব্র্যান্ড।
প্রফেসর ইউনুস শুধু বাংলাদেশের নয় সারা বিশ্বের বড় সম্পদ। আমরা হতভাগ্য বাঙালি শুধু তাকে চিনতে পারেনি। কিন্তু সারা বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্র প্রধানেরা তার দর্শন, দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে দরিদ্র জনগণের উন্নয়নে দেশে দেশে বিপ্লব ঘটাচ্ছেন।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস পৃথিবী ও মানবতাকে রক্ষা করতে সক্ষম একটি নতুন অর্থনীতির স্বপ্নকে তুলে ধরেছেন। ক্ষুদ্রঋণের জনক মুহাম্মদ ইউনুস সামাজিক ব্যবসার উদ্ভাবন এবং দারিদ্র্য নিরসনে সারা বিশ্বে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করায় বাংলাদেশকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।
তিনি প্রথম বারের মতো বিশ্বের দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং এর অধিকার অংশীদারিত্ব দিয়েছেন।
বর্তমান বিশ্বব্যবস্থার একজন তীক্ষ্ণ সমালোচক মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, এটা মেনে নেওয়ার সময় এসে গেছে যে পুঁজিবাদের ব্যবস্হা ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। পুঁজিবাদের কাঠামোটি চোখের সামনে ভেঙে পড়েছে । এই পুঁজিবাদ আমাদেরকে ব্যাপক বৈষম্য, ব্যাপক বেকারত্ব, এবং পরিবেশেগত বিপর্যয়ে পৌঁছে দিয়েছে।
ম্যাজিক অব ড. ইউনূস প্রফেসরদের প্রফেসর নোবেল লেকচারে ২০০৬ সালে তিনি বলেছেন, ”দারিদ্র্য জাদুঘরে পাঠানো যায়।”- এ মন্ত্র এখন বিশ্বজুড়ে পঠিত।
মিডিয়া মোগল ওপরাহ উইনফ্রে বলেন, ড. ইউনূস হলেন আধুনিক যুগের গান্ধী। তিনি সারা বিশ্বে প্রমাণ করেছেন একটি মাএ মানুষের দৃঢ সংকল্প কিভাবে কোটি কোটি মানুষ এর জীবন বদলে দিতে পারেন। সূুএ: OWN TV( 2010)
অভিনেত্রী ও মানবাধিকার কর্মী এঞ্জেলিনা জলি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আমি ঋণী। তিনি আমাকে শিখয়েছেন কিভাবে ক্ষুদ্র উদ্যেগ নারীর ক্ষমতায়নে বিপ্লব ঘটাতে পারে। সূত্র :UNHCR (2012)
সাংবাদিক, লেখক ও বক্তা ম্যালকম গ্লাডওয়েল ড.ইউনূসের দর্শনকে ‘Win-Win Philosophy’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।
নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই বলেন, ড. ইউনূস আমাকে শিখিয়েছেন যে নারীরা শুধু সাহায্য চায় না – তারা সুযোগ চায়। সে সুযোগ সে তৈরি করেছে। সূত্র : টাইমস ম্যাগাজিন,(২০১৪)
নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু বলেন, ইউনূসের কাজ শান্তির প্রকৃত অর্থ বোঝায়।তিনি শান্তি আনেনি। তিনি শান্তি তৈরি করেছেন।মানুষকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিয়ে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান( ২০০৭)
আ্যমাজান প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস বলেন : ইউনূসের মত উদ্ভাবকরা বিশ্বকে বদলে দেন। তার মাইক্রোক্রেডিট ধারণা দেখিয়েছে যে ছোট ছোট ঋণও কিভাবে বিশাল পরিবর্তন আনতে পারেন। সূত্র : BELoS Earth Fund( 2020)
প্রফেসর ইউনূসকে ম্যাজিক অব পার্সোনালিটি বলা হয়। কারণ তার চিন্তার স্বচ্ছতা ও প্রভাবশালী বক্তৃতা। আর ব্যক্তিত্বের মূল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে তারা অবিচল আত্ম বিশ্বাস নানা প্রতিকূলতার পরও তিনি ভেঙ্গে পড়েন নি। বরং বিশ্বাস করেছেন যে দারিদ্র্যরাও সফল হতে পারে।
তার থ্রি -,জিরো তত্ত্ব একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি যা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য গড়ে উঠেছে। সে গুলো হলো জিরো দারিদ্র্য (Zero Poverty), জিরো বেকারত্ব (Zero Unemployment) ও জিরো কার্বন নিঃসরণ (Zero Carbon Emissions)।
তার এ তিন শূন্যের পৃথিবীর ধারণা সারা বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছে। তা এটা আর অবাক হওয়ার বিষয় নযে যে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী পোল্যান্ডের মাদাম কুরির মত তিনি দ্বিতীয় বারের মত নোবেল পুরস্কার পাওয়ার ব্যাপারে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
তাই আমাদের সকল শ্রেণি- পেশার মানুষ , সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দর নিকট আমাদের ১৮ কোটি জনগণের একান্ত নিবেদন আমাদের দেশকে ড. মাহাথির মোহাম্মদ এর মালয়েশিয়া ও লু কেং এর সিঙ্গাপুর এর সমকক্ষ বানাতে হলে ড. মুহাম্মদ ইউনুস কে দীর্ঘ মেয়াদ এ আমরা ক্ষমতায় দেখতে চাই। কারন বর্তমান বিশ্বের হাতেগোনা ২/৩ ব্যক্তির মধ্যে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তার জ্ঞান, প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, দক্ষতার সামনে শুধু বাংলাদেশ নয় দুনিয়ায় আর কেউ নেই। তার সার্ভিস থেকে বাঙালি জাতিকে বঞ্চিত করা হবে দুর্ভাগ্যজনক। আগামী আরও ১০০ বছরে এ রকম লিজেন্ড ড. মুহাম্মদ ইউনুস
এ দেশে জন্ম নিবে কিনা সন্দেহ?প্রফেসর ড মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের গর্ব ও বাংলাদেশের অহংকার। এ রকম রত্নকে আমরা কিছুতেই হাতছাড়া করতে পারি না। এ জন্য বহুভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বলেছেন গুণী লোক যে দেশে তার প্রকৃত মর্যদা পায় না। সে দেশে গুণী জন জন্মে না।
লেখক : সাবেক শিক্ষার্থী চবি, সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। Email Id:azam [email protected]