নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা আহত হয়ে মারা যায় হামেশ ঢালী নামে শতবর্ষী এক বৃদ্ধের। কিন্তু আপন ভাবী ও ভাতিজা ভাতিজিদের মধ্যে ঘায়েল করতে হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের ছেলে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম।
সম্পত্তি দখলে নিতে তিনি দুর্ঘটনাকে হত্যা মামলা সাজান।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে সে বিভিন্নভাবে তাদেরকে হয়রানি করছে ও হুমকি দিয়ে আসছে। স্থানীয় মোল্লারহাট বাজারে দোকানপাট দখলসহ বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না ভুক্তভোগীদের।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মোল্লারহাট এলাকায় ঢালী বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার এসব অভিযোগ করেন। এসময় তার ছেলে সোহেল সামাদ রুবেল, শওকত আকবর, মেয়ে খোদেজা আক্তার, মেয়ে জামাই ফয়েজ আহমেদ, ননদ রাজিয়া বেগম ও পারভিন আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ১৬ জুন দায়েরকৃত মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা রায়পুরের হাজীমারা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহাম্মদ গত ৫ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে উল্লেখ করা হয়- তদন্তকালে মামলায় অভিযুক্ত সোহেল সামাদ রুবেল, শওকত আকবর পারভেজ, খোদেজা আক্তার সুমি, সেলিনা আক্তার, ফয়েজ আহম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় অপর আসামি রাকিবের বিরুদ্ধে আদালতে বিচারের জন্য অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। অপর ৫ অভিযুক্তকে অব্যহতি প্রদানের জন্য প্রার্থনা করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফারুক আহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সেলিনা আক্তার বলেন, আমার শ্বশুর আবু হাশেম ঢালী গত ১০ জুন সকালে মোল্লারহাট বাজার থেকে বাড়িতে আসার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হয়। পরে তাকে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েই তিনি মারা যান। কিন্তু আমার দেবর শাহ আলম আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমার স্বামী একেএম সামছুল আলম মারা যাওয়ার পর আমাদের জমি-দোকানপাট দখল করে রেখেছে। এসব সম্পত্তি আত্মসাত করতেই আমাদেরকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
সেলিনার ছেলে সোহেল সামাদ রুবেল বলেন, মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত ও হয়রানি থেকে রেহাই পেতে আমরা পুলিশের আইজিপি, ডিআইজি ও কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পায়নি। এতে আমাদেরকে মামলা থেকে রেহাই দিতে আদালতে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু শাহ আলম বিভিন্নভাবে আমাদেরকে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। সে পুনরায় মামলাটি তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করে। মামলাটি এখন পিবিআই নোয়াখালীর তদন্তে রয়েছে।
মৃত আবু হাশেম ঢালীর মেয়ে রাজিয়া বেগম বলেন, আমার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ৬ দিন পর তিনি মারা যান। কিন্তু আমার ছোট ভাই সম্পত্তির জন্য একটি হত্যা মামলা করেন। সেখানে আমার ভাবি-ভাতিজি ও ভাতিজাদের আসামি করেছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে কক্সবাজার জেলা পুলিশে কর্মরত এসআই মো. শাহ আলমের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।