• শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ১০:১০ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
চন্দ্রগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসস্ত্রসহ ১জন গ্রেপ্তার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম রামগঞ্জে কেন এতো জনপ্রিয় ? লক্ষ্মীপুরে ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কমলনগরে উৎসব মুখর পরিবেশে বিএনপি’র কাউন্সিল নির্বাচন সম্পন্ন জলাবদ্ধতা নিরসনে কমলনগরের ভুলুয়া নদীতে প্রশাসনের যৌথ অভিযান লক্ষ্মীপুরে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার ২ সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক আব্বাস উদ্দিনকে হত্যার হুমকি : জেলার সকল সাংবাদিকদের ক্ষোভ প্রকাশ লক্ষ্মীপুরে চিহ্নিত মাদক কারবারি ‘ফাইটার বাবলু’-কে কুপিয়ে হত্যা রামগঞ্জে মসজিদে রাজনীতির টিকেট বিক্রি নিষিদ্ধ রাখার আহ্বান শাহাদাত হোসেন সেলিমের কমলনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের কমিটি গঠন

রায়পুরের আলতাফ মাষ্টারের ঘাট, প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক স্বর্গীয় অভিজ্ঞতা

Reporter Name / ৬৯ Time View
Update : শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

প্রদীপ কুমার রায়:

ক্লান্তি আর কর্মব্যস্ততার যান্ত্রিক জীবনে একটুকু প্রশান্তি ও বিশ্রামের জন্য প্রকৃতির কাছে ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সবাই অনুভব করেন। আর যখন ছুটির সময় আসে, তখন কোথাও গিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ যেন এক ধরনের মুক্তির অনুভূতি। ঠিক এমনই এক শান্তির দ্বার, যেখানে সময় থেমে যায়, আর মনের ভেতর এক তাজা সঞ্চার ঘটে—সেটি হলো লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের আলতাফ মাষ্টারের ঘাট।

স্থানীয়ভাবে ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে পরিচিত এই জায়গাটি এখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত। এখানকার নদী, বাতাস, আকাশ, সব কিছু মিলে যেন এক সুস্পষ্ট মিথস্ক্রিয়া তৈরি করেছে, যেখানে প্রতিটি দিক থেকে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাকৃতিক শান্তি। মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই স্থানটি শুধু ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে নয়, প্রকৃতিপ্রেমী সকলের জন্য এক আদর্শ স্থান হয়ে উঠেছে।

নদীর কলকল ধ্বনি, স্নিগ্ধ বাতাস, আকাশ আর নদীর পানি—সব মিলিয়ে একটি অপরূপ দৃশ্য। আলতাফ মাষ্টারের ঘাটে এসে আপনি দেখতে পাবেন এক বিরল ধরনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যা আপনাকে নিরিবিলি পরিবেশে অবগাহন করতে সুযোগ দেবে। এখানকার গ্রামীণ পরিবেশ, মেঘনা নদী, ও স্নিগ্ধ বাতাস যে কারো মন ভালো করতে পারে। বিশেষত শীতকালে এখানে আসা একেবারেই আদর্শ।

ভ্রমণপিপাসুদের জন্য উত্তম স্থান
প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সময় কাটানোর জন্য এখানে কোনো প্রবেশ মূল্য নেই। এটি এমন একটি স্থান, যেখানে আপনি মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন এবং বনভোজনও করতে পারেন। এখানকার স্থানীয় নৌকা মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে আপনি মেঘনা নদীতে ভ্রমণও করতে পারেন, যদিও এটি সবসময় সহজলভ্য থাকে না। তবে, স্থানীয়দের সহযোগিতায় সবকিছুই সম্ভব।

এ অঞ্চলে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে ভালো মানের কিছু খাওয়ার হোটেল এবং চাইনিজ রেস্টুরেন্ট। তাই আপনি প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি এখানকার মজাদার খাবার উপভোগও করতে পারবেন।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা থেকে হায়দারগঞ্জের বাসাবাড়ি বাজারে আসতে হবে। এখান থেকে আঞ্চলিক সড়ক ধরে চরইন্দুরিয়া মেঘনাবাজার এলাকায় ২ কিলোমিটার সোজা গেলে পৌঁছে যাবেন আলতাফ মাষ্টারের ঘাটে। এটি একটি সহজলভ্য পথ, যা আপনাকে এই প্রকৃতির লীলাভূমিতে পৌঁছে দেবে।

এখানে এসে প্রকৃতির শান্তি ও সৌন্দর্য উপভোগ করা নিঃসন্দেহে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা, বলে মন্তব্য করেন পর্যটক মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, “প্রকৃতির এত কাছ থেকে একটুও দূরত্ব বোধ করা যায় না। এখানে এসে মনটা একদম শান্ত হয়ে যায়, আর জীবনটাকে এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পাই।”

এই সৌন্দর্য্যটির যদি যথাযথ পর্যটন পরিকল্পনার মাধ্যমে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে এটি রায়পুরের অর্থনীতিতে বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিমধ্যেই এখানকার স্থানীয় মানুষদের কাছ থেকে পর্যটন শিল্পের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। তবে, সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে যদি আলতাফ মাষ্টারের ঘাটের উন্নয়ন করা হয়, তবে এটি এক সম্ভাবনাময় রিসোর্টে পরিণত হতে পারে।

এই মিনি কক্সবাজারের পরিবেশে যদি সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আরো বেশি নজর দেয়, তবে এটি শুধু রায়পুরের জন্য নয়, পুরো লক্ষ্মীপুর জেলাও লাভবান হবে। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হবে, আর দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আগমনও বাড়বে।

একদিকে এই ভ্রমণ স্পটটির সম্ভাবনা অপরিসীম, অন্যদিকে এখানকার উপকূলীয় জনগণের জন্য সঠিক পরিকল্পনা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। একসাথে সরকার ও স্থানীয়দের উদ্যোগে যদি আলতাফ মাষ্টারের ঘাটকে একটি পরিকল্পিত পর্যটন রিসোর্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, তবে এটি হতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

অল্প সময়ের ভ্রমণে প্রকৃতির এমন অপূর্ব দৃশ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যেন মনের গভীরে এক শুদ্ধ অনুভূতি তৈরি করে। রায়পুরের আলতাফ মাষ্টারের ঘাট এক অনন্য স্থান, যেখানে প্রকৃতি আর মানুষের সম্পর্কের মিষ্টি মেলবন্ধন ঘটে। যদি এখানে পর্যটনের জন্য যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে এটি হতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম গন্তব্য স্থান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd