• বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
রামগঞ্জে বৃদ্ধাকে জবাই করে হত্যা স্বর্ণালংকার লুট সাংবাদিক সুরক্ষা ও কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর গাজীপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ঈদ পূর্ণ মিলন ও পরিচিতি সভা লক্ষ্মীপুরে কুরআনের হাফেজ শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু: এলাকাবাসীর মাদ্রাসা ঘেরাও লক্ষ্মীপুরে ছাত্র হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের দুই সাবেক জনপ্রতিনিধি গ্রেপ্তার অভিভাবকতূল্য মানুষ—জহির উদ্দিন ভূঁইয়া স্মরণে রায়পুরে নূরানী মাদ্রাসায় ছাত্র বলাৎকার, শিক্ষক রাকিব পলাতক লক্ষ্মীপুরে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রাসহ লন্ডারিং চক্রের হোতা গ্রেফতার কমলনগরে প্রাথমিক শিক্ষকদের সপ্তম দিনেও টানা কর্মবিরতি পালন-সঙ্কট নিরসনে নেই কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ! লক্ষ্মীপুরে তৃণমূলে জ্ঞানচর্চার নতুন দুয়ার ৩৬ ইউনিয়নের গণপাঠাগার রামগঞ্জে পুলিশের হাতে ছাত্র ও যুবলীগের দুই নেতাসহ আটক ৩

লক্ষ্মীপুরে কুরআনের হাফেজ শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু: এলাকাবাসীর মাদ্রাসা ঘেরাও

Reporter Name / ২০ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

প্রদীপ কুমার রায়:
মাত্র সাত বছর বয়সেই ২০ পারা কুরআন হিফজ করা এক নিষ্পাপ শিশুর জীবন থেমে গেল মর্মান্তিকভাবে। লক্ষ্মীপুর সদরের একটি ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাফেজ ছাত্র সানিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে অসংখ্য প্রশ্ন ও শোকের মাতম।

নিহত সানিম (৭) রায়পুর উপজেলার উত্তর চর বংশী ইউনিয়নের হুমায়ুন মাতাব্বরের ছেলে। সে লক্ষ্মীপুর শহরের ‘আল মুঈন ইসলামি একাডেমি’র আবাসিক ছাত্র ছিল। মঙ্গলবার সকালে প্রতিষ্ঠানটির শৌচাগারে ঝুলন্ত অবস্থায় সানিমের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দাবি করছে— এটি আত্মহত্যা। কিন্তু শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী এই দাবিকে নাকচ করে বলছে, সানিমের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটি বর্বর নির্যাতনেরই পরিণতি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, “ঘটনাস্থলে এসে শিশুটির গলায় ফাঁসের দাগ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। সকালে ওই শিক্ষকই সানিমকে মারধর করেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

সানিমের পরিবারের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে শিক্ষক মাহমুদুর প্রায়ই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। সানিম একাধিকবার পরিবারের কাছে তার ওপর চলা নির্যাতনের কথা জানিয়েছিল। “আমার ছেলে কুরআনের ছাত্র ছিল, আল্লাহর কালাম মুখস্থ করছিল— তাকে কি এভাবে মরতে হয়?” বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত শিশুর বাবা।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সানিম আত্মহত্যা করেছে। তবে এই দাবির পক্ষে তারা কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ বা ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে পারেনি। একটি সাত বছর বয়সী শিশু, যার ধর্মীয় অনুশাসন এবং পরিবারিক অভিভাবকত্ব বিদ্যমান, সে কীভাবে এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে— এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় শিশু অধিকার সংগঠনগুলোও।

ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা মাদ্রাসা ঘেরাও করে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। একপর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় এলাকায় শিশু সুরক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অভিভাবকদের অনেকেই বলছেন, “ধর্মের নামে যদি শিশুর জীবনও নিরাপদ না থাকে, তাহলে আমরা কোথায় যাবো?”

সানিমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, তদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে একটি নিখুঁত তদন্ত আর ন্যায়বিচারের দাবি এখন শুধু একটি পরিবারের নয়— এটি এখন সমগ্র জাতির একান্ত দাবি।

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd