মাহমুদুর রহমান মনজু:
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে প্রায় ২৫ একর জমিতে বেবিলন-২ জাতের ধান আবাদ করেছেন ড. আশরাফ আলী চৌধুরী সারু। সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে বেশ। এখন তিনি ধান মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু ধান নয়, প্রায় ৮০ একর জমিতে ধান, ফল ফলাদি, ভেড়া, ছাগল পালন ও জলাশয়ে মাছ চাষ করছেন তিনি। তাঁর সমন্বিত এই খামার পল্লীতে অন্তত ২৫টি পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
ড. আশরাফ আলী চৌধুরী রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের চর আফজল গ্রামের হাজী খুরশিদ আলী মিয়ার ছেলে। তিনি লন্ডনে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। স্ত্রী ঢাকায় শিল্পকারখানা পরিচালনা করছেন আর দুই মেয়ে চিকিৎসক (এমবিবিএস) ও এক ছেলে যুক্তরাজ্যে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন।
পুরো নাম ড. আশরাফ আলী চৌধুরী (সারু) হলেও স্থানীয়রা গরীবের সারু প্রফেসর হিসেবেই চিনেন তাঁকে।
ড. আশরাফ আলী চৌধুরী সারু বলেন, ইরি বোরো মৌসুমে বেবিলন-২ জাতের ধান আবাদ করেছেন তিনি। সঠিক পরিচর্যা, সময়মতো পানি, সার, কীটনাশক, পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার ও সঠিক তত্ত্বাবধানের কারণে ধানে তেমন কোন রোগ বালাই হয়নি। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে পরামর্শ ও প্রবাসে নিজের চিন্তা এবং গবেষণা ধান আবাদে তিনি কাজে লাগান। ফলে এ মৌসুমে তাঁর ২৫ একর জমিতে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরো বলেন, এক গুচ্ছ ধানের শীষে ২৮ /৩০ ছড়া ধান ফলন হয়। এবং সঠিক পরিমাপ করে দেখলাম এক একটি গুচ্ছ থেকে ৬০ গ্রাম থেকে ২৮০ গ্রাম ধান উৎপাদন হয়েছে। প্রতিটি ধানের গুচ্ছকে তিনি সযত্নে পরিচর্যা করায় ফলনও হয়েছে বেশ। এবছর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় করায় উৎপাদন খরচ প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা হলেও লাভ দ্বিগুণ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন, সারু প্রফেসর প্রবাসের উন্নত জীবনযাপন ও ঢাকার চাকচিক্যময় বিলাসিতা ছেড়ে নিজ গ্রামে কৃষি নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন। উচ্চ শিক্ষিত হয়েও তিনি গ্রামের কৃষকদের সাথে মাঠে কৃষি কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। এলাকার বেকার যুবকদের তিনি কর্মসংস্থানের যোগান দিচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ জহির আহমেদ বলেন, কৃষকদের পাশে সবসময়ই কৃষি অফিস আছে। রামগতিতে ড. আশরাফ আলী চৌধুরীর ধান আবাদে সাফল্যে মূলত সঠিক পরিচর্যার কারণেই সম্ভব হয়েছে। তাঁর মত এমন শিক্ষিত লোকেরা তাঁদের শিক্ষার আলো জমিতে প্রয়োগ করলে ওই এলাকার অনেক কৃষক উপকৃত হবেন।