রামগতি-কমলনগর(লক্ষ্মীপুর)সংবাদদাতা :
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোটি টাকার জমি দখলে রাখতে সহকারি জজ আদালত রামগতি, লক্ষ্মীপুর কোর্টে মামলা দায়ের করেন ‘দখলদার’ আব্দুল হালিম চৌকিদার পুত্র আব্দুল মতিন। টানা ১৫বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় পরিচয় দিতেন আওয়ামী লীগ নেতা। ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। পদ ছোট হলেও দাপট ছিল ব্যাপক। ক্ষমতার প্রভাবে জোরপূর্বক ভাগিয়ে নেন পাউবো’র প্রায় ৪৬শতাংশ জমি। যার বাজার দর প্রায় ৭-১০ কয়েক কোটি টাকা। শুরু হয় তার একক আধিপত্য এবং অহমিকার রাজত্ব। আস্তে আস্তে জমি দখলের নেশায় মন্থ হয়ে বনে যান ধনকুবের, হন অঢেল সম্পত্তির মালিক। তিনি পাউবো’র দখলে হয়ে যান “জমি খেকো” মতিন।
স্থানীয়রা জানান, আব্দুল মতিন আওয়ামীলীগ নেতার পরিচয়ে মেম্বার নির্বাচিত হয়ে পাউবো’র নির্মানাধীন ঘর দখলসহ কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলে নেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখলের তার একক আধিপত্য বিরাজ করছে। যেখানেই পাউবো’র জমি দখল, সেখানে মতিন মেম্বার। জমি দখল, দলের ক্ষমতা দীর্ঘদিন থাকায় তার দখল বানিজ্য চলতে থাকে। সরকারি জমিতে নির্মান করেন “মতিন মার্কেট”।
স্থানীয়রা আরও জানান, পাউবো তাদের জমি কখনোই দখল উচ্ছ্বেদ করতে পারবে না। মতিন খুবই দাপটে ও দু:ধর্ষ। তার ভয়ে স্থাণীয়রা মুখ খুলছে না। সে জমি দখলে রাখতে পাউবো’র বিরুদ্ধে নানা অজুহাতে মামলা দায়ের করেন। আদালত দখল উচ্ছ্বেদের বিরুদ্ধে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা আদেশ দেন। বাজারের উপর প্রায় ৪৫-৫০শতাংশ জমি দখল করে দোকান নির্মান করেন। কয়েক বছরে সম্পদের পাহাড়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হন মতিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তোরাবগন্জ বাজারে পাউবো’র পরিত্যক্ত ৩টি ঘর, বাজারে পুকুরের পূর্বে ১১টি ঘর, পুকুরের পশ্চিমে ৩টি ঘর, আধা পাকা ১টি, উত্তরে মসজিদের পাশে ৩টি ঘর, দক্ষিনে স্কুলের পিছনে কয়েক রুম বিস্তৃিত বেকারীর ফ্যাক্টরি রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় কমলনগরে কোটি টাকার জমি তার দখলে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
জানা যায়, জোরপূর্বক ভূমি দখলের তাকে একাধিক বার নোটিশ করে পাউবো। নোটিশ অমান্য করায় দখলদারিত্বে অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলা চলমান রয়েছে। এবং সূত্রে জানা যায়, তার দখলের কিছু লিজ বাতিল রয়েছে। প্রায় ৪৬ শতক জমি তার জবর দখলে রয়েছে। তার দখলে থাকা এক একেকটি দোকান ঘরের বাজার মূল্য প্রায় ২০-৩০লাখ টাকা রয়েছে। পাউবো’র জমির দোকান ঘরে প্রতিমাসে ভাড়া তোলেন প্রায় লাখ টাকা।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের তোরাবগন্জ ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা আব্দুল হালিম চৌকিদার পুত্র আব্দুল মতিন মেম্বার। তিনি তোরাবগন্জ ইউনিয়ের ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিষদের বর্তমান মেম্বারের দায়িত্বে রয়েছে। আব্দুল মতিন মেম্বার জানান, পাউবো’র কোন জমি তার দখলে নেই। তাদের পূর্ব পুরুষের নথিভুক্ত জমিতে তিনি মার্কেট নির্মান করেন। এছাড়াও তার দখলে থাকা দোকানঘরগুলোর উচ্ছ্বেদ অভিযান বাতিল করতে আদালতে স্ট্রে অর্ডারের মামলা দায়ের করেন।
পাউবো প্রকৌশলী মো.নাহিদ উজ জামান জানান, সরকারি কোন জমির বিরুদ্ধে মামলা হয় না। পাউবো’র জমিতে স্থায়ী দালান করা যাবে না। মতিন মেম্বারের দখলে থাকা জমি উদ্ধারের বিষয়ে লেখা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত উচ্ছ্বেদ অভিযান পরিচালনা হবে। কেউ মামলা করলে স্ট্রংলি পাউবো’র আইনজীবি রয়েছে, তারা মোকাবেলা করবে।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা ঝন্টু বিকাশ চাকমা জানান, পাউবো’র জমি দখলের বিষয়ে কাগজ পেয়েছি। স্থানীয় তহশিলদার দখলের বিষয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে আদালতে মামলা থাকলে অভিযানে একটু সমস্যা হয়। তবে সরকারি জমিতে কারো মামলা দায়ের হয় না। ভূমি আইন মতে খুব দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।