রায়পুরে খেজুর রস চুরির প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ

Spread the love

 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জাকির হোসেন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ঝাউডগী গ্রামের খেজুর রস চুরির প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধ গিয়াসউদ্দিন (৬০) কে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

১৫ ফেব্রুয়ারী (বৃহস্পতিবার)  ইশার আজানের পড়ে হাফেজ রাড়ির দক্ষিণে সাঈদ মাওলানা বাগানের ভিতরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে আহত গিয়াসউদ্দিন (৬০)পিতা হাফেজ মন্তাজ রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বেডে শুয়ে কেঁদে কেঁদে সাংবাদিকদের বলেন, ”  খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করা আমার বর্তমান পেশা।  কয়েকদিন ধরে আমার খেজুর গাছ থেকে রস চুরি হচ্ছে। তাই  আমি ইশার নামাজ আদায় করে বাগানে খেজুর গাছ দেখতে যাই। সেখানে গিয়ে  দুজনকে বাগানের ভিতরে দেখতে পাই। তখন ওদেরকে বাগানে কী করছে জিজ্ঞেস করলে ওরা বলে এখানে মাগী নিয়ে ফূর্তি করছি তাতে তোর কী? বলেই আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।  দুজনে আমার উপর হামলা শুরু করলে পরে ওদের আরও কয়েকজন এসে একত্রিত হয়ে আমাকে মেরে মারাত্মক জখম করে দেয়।  হামলাকারীরা হচ্ছে, তানজিদ (২৩)পিতা ছিদ্দিক রাড়ি, নিহাদ (১৬) পিতা লিটন রাড়ি,  সবুজ ( ৪০) পিতা হামিদ রাড়ি,  সহ অজ্ঞাত আরও দুই, তিন জন। ওরা মূলত আমার রস চুরি করতেই ওখানে এসে ওঁত পেতে ছিল । আমি প্রতিবাদ করায় ওরা আমার উপর হামলা করে আমাকে মারধর করে।  আমার চিৎকার সোরগোল শুনে স্থানীয়রা দৌড়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। ”

আহত গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী কেঁদে কেঁদে সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী একজন সহজ সরল লোক।  অনেক কষ্ট করে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন। সেই রস কয়েকদিন ধরে চুরি করছে ওরা। হাতেনাতে ধরার জন্য আমার স্বামী রাত ৮টার পড়ে ইশার নামাজ আদায় করে বাগানে খেজুর গাছ দেখতে গিয়ে ওদেরকে দেখতে পায়। কী করছে এতো রাতে বাগানে জানতে চাওয়ায় আমার স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নির্মমভাবে মারধর করে গুরুতর জখম করে।  আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।  বিষয়টি নিয়ে আমার স্বামী একটু সুস্থ হলেই থানায় অভিযোগ করবো। ”

হামলাকারী দুজনের আত্মীয় রফিক রাড়ী পিতা মোস্তফা রাড়ী,  আনোয়ার বেপারি হাসপাতালে আসলে তাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তারা সাংবাদিকদের কোন সাক্ষাৎকার দিবেন না বলে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

হামলাকারী নিহাদের বাবা লিটন মুঠোফোনে জানান, ” মারামারির বিষয়টি আমি জানিনা। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না।  পরে শুনেছি।  তবে রস চুরির বিষয়টি মিথ্যা। ”

এবিষয়ে জরুরী বিভাগের ডাক্তার রিয়াজ হোসেন বলেন,  তাকে শরীরের অনেক জায়গায় মারধরের আলামত পেয়েছি।  তার পুরো শরীরে মারধর করা হয়েছে।  ভালোভাবে জখম হয়েছে।  সুস্থ হতেও বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে।
এবিষয়ে ঐ এলাকার নুরুল আমীন মেম্বার বলেন, ” মারামারির বিষয়টি আমি শুনেছি,  দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার চেষ্টা করছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সমাধানে পৌঁছতে পারিনি। ”

এবিষয়ে রায়পুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *