বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সংগঠনটির আলেকজান্ডারস্থ উপজেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আর্থিক সহায়তার টাকা হস্তান্তর করা হয়। নিহত শামীমের পরিবারের পক্ষে সহায়তার নগদ টাকা গ্রহন করেন তার পিতা আবদুল হাই।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমির এসইউএম রুহুল আমিন ভূঁইয়া। উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুর রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির এআর হাফিজ উল্যাহ, পৌর আমির মাওলানা আবুল খায়েরসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা জানান, জামায়াত ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকলের পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে রামগতিতে শামীমের পরিবারকে এ সহায়তা দেওয়া হয়। পাশাপাশি এ আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতা করা হচ্ছে। ঢাকায় আন্দোলন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়া রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চর হাসান হোসেন গ্রামের মো. জমিরের ছেলে বাবুল হোসেন (২০) এবং চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিশ্বগ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে জসীম উদ্দিনকে (৪২) বিভিন্ন ভাবে জামায়াতের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে।
শামীমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তার পুরো নাম শাহাদাত হোসেন শামীম। তার বাড়ি চর আালেকজান্ডার ইউনিয়নের সবুজ গ্রামে। মায়ের নাম নুর নাহার। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী তার বয়স ২২ বছর। সে ঢাকার আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম থেকেই সক্রিয় ভাবে অংশ নিয়েছেন। ৫ আগস্ট সকাল দশটার দিকে আশুলিয়া থানার অদূরে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন শামীম। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঢাকায় বসবাসকারী এক নিকটাত্মীয়র সাথে যোগাযোগ করে একই দিন রাত ৮টার সময় মৃতদেহ বাড়িতে আনা হয়। রাতেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
শামীমের বাবা আবদুল হাই জানান, তার ছেলে কোন দলের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল না। কেবলমাত্র বৈষম্য দুর করার অভিপ্রায়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে বলে একাধিকবার ফোনে জানিয়েছে। তবে ধর্মভীরু হিসেবে নিয়মিত নামাজ-কালাম আদায় করতো। পরিবারের উপার্জনকারী হিসেবে ছেলেকে হারিয়ে তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। জামায়াতের আর্থিক অনুদান পেয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তামুক্ত হলেন বলেও জানান তিনি। বৈষম্য ও শোষণহীন একটি দেশ গঠিত হলে তার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে বলে তিনি মনে করেন।