• শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
লক্ষ্মীপুরে ৪ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় আ. লীগের ১৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার সড়কেই শুকাতে দিল সয়াবিন, মোটরসাইকেল পিছলে প্রাণ গেলো কৃষি কর্মকর্তার রামগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক কমিটি গঠন মুকুল সভাপতি,জাকির সম্পাদক, জাবেদ সাংগঠনিক সম্পাদক লক্ষ্মীপুরের গৃহবধূর শরীরে পেট্টোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে নিজের শরীর জ্বলছে দেয় পাষণ্ড স্বামী ৩নং দালাল বাজার ইউনিয়ন বিএনপির তূণমূলের নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে মনোনয়ন ফরম বিতরণ লক্ষ্মীপুরে বিআরটিএ বাড়তি টাকা আদায়ের সত্যতা পেয়েছে দুদক পরিচয় মেলেনি সেই নবজাতকের, বেড়ে উঠবে শিশু নিবাসে রামগঞ্জে মোরশেদ ব্রিকসের মাটি দিয়ে ব্রিজের মুখ ভরাট, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সয়াবিন লুট ঠেকাতে রায়পুরে এএসপির নেতৃত্বে সচেতনতামূলক মহড়া রায়পুরে বই মেলায় উপচে পড়া ভিড়, পাঠককুলে বইছে হৃদয়ের জয়গান,

রামগঞ্জ বাসীর মরণফাঁদ বীরেন্দ্র খাল  খনন না হলে এবারও ডুবতে হবে রামগঞ্জবাসীকে

Reporter Name / ৪০ Time View
Update : সোমবার, ৫ মে, ২০২৫

মোঃ মাসুদ রানা মনি:
লক্ষীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বীরেন্দ্র খালটি দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় জলাবদ্ধতার কারণে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ লোককে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বীরেন্দ্র খাল খনন এখন মানুষের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।খালটির  কারণে এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা প্রায় সারা বছর পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ফলে এই এলাকায় এক ফসলের বেশি দুই  ফসল করা সম্ভব হয় না। 
রামগঞ্জ বিরেন্দ্র খাল  খনন এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।  এবারও যদি এ খালটি খনন করা না হয় তাহলে আবারও রামগঞ্জের  সাড়ে পাঁচ লক্ষ লোককে পানিতে ডুবতে হবে।  দীর্ঘদিন যাবত  বীরেন্দ্র খাল খনন না হওয়ায় জলবদ্ধতার কারণে  গত বছর ২০২৪ সালে  এই উপজেলার কয়েক লক্ষ লোককে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে। হাজার হাজার পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হয়েছে।
রামগঞ্জ উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ বীরেন্দ্র খালটির দুই পাড় অবৈধ দখল ও দীর্ঘদিনের দূষণে আজ মৃতপ্রায়। এক সময়ের প্রাণবন্ত এই খালটি রূপ নিয়েছে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে। খালের বেশির ভাগ অংশে বেহালজাল, গড়া জালসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারনে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ। 

বর্ষা এলেই রামগঞ্জে দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও বন্যা।
স্থানীয় সূত্রে ও এলাকাবাসীর তথ্যমতে ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় এই খালের পানিপ্রবাহ থেমে গিয়ে রামগঞ্জ উপজেলায় সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতা। চরম বিপর্যস্ত করে তোলে এলাকার সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, কৃষিকাজ ও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা।
উপজেলার কাঞ্চনপুর, নোয়াগাঁও, ভাদুর,ভাটরা,দল্টা, করপাড়া, গাজীপুর, লামচর, চন্ডিপুর, ইছাপুর, লামচর, ভোলাকোট, টিউরী, আথাকরা, উদয়পুর, হাফানিয়া গ্রামসহ পুরো উপজেলাবাসী পড়েন চরম বিপাকে।  
আবুল কালাম খোকা, দেলোয়ার হোসেনসহ বয়স্করা মনে করছেন, বীরেন্দ্র খালসহ সংযোগ খালগুলো নিয়মিত খনন না করা হলে এমন দুর্যোগ অব্যাহত থাকবে- বরং তার মাত্রা হবে আরও ভয়াবহ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রামগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ খাল খননের কোনো উদ্যোগ নেই। উল্টো খালের বিভিন্ন অংশে অবৈধ স্থাপনা, দোকানপাট, এমনকি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, কোথাও কোথাও সংযোগ খালে মাটি ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে বাসা-বাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যা স্বাভাবিক পানি চলাচলের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব প্রতিবন্ধকতার কারনে একদিকে প্রবাহমান খালটিতে পানি জমে থাকে অন্যদিকে কোথাও কোথাও শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। ফলে ব্যহত হয় চাষাবাদ।
২০২৪ এর বন্যায় পানি আটকে পানিবন্ধী মানুষকে দ্রুততম সময় উদ্ধারে গত বছর রামগঞ্জ ব্লাড ডোনার’স ক্লাবের উদ্যোগে রামগঞ্জ ব্লাড ডোনার’স ক্লাবসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা প্রায় ৪০ দিন পরিশ্রম করে খালের গুরুত্বপূর্ণ ২ কিলোমিটার (রামগঞ্জ-সোনাপুর বাজার) এলাকা পরিষ্কার করলে পানি দ্রুত নেমে যায়। 
খাল পরিস্কারের উদ্যেক্তা ফারুক হোসেন বলেন, “আমরা দীর্ঘ ৪০-৪৫ বছরের জমে থাকা ময়লার স্তুপ পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু প্রয়োজনীয় খনন ও সংস্কার না হলে এই খাল আবারও ভরে যাবে ময়লা আবর্জনায়। খনন প্রক্রিয়া দ্রুত গতিশীল না করলে ২০২৪ সালের মতো ভয়াবহ বন্যা আবারও দেখা দিতে পারে, যার প্রভাব পড়বে উপজেলার প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ মানুষের জীবনে-কৃষি- স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে।”
আনোয়ার হোসেন বাবুল বলেন, “খালের অনেক অংশে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখা হয়েছে। ফলে ফসলের জমিতে প্রয়োজনীয় পানি পৌঁছায় না। আবার কোথাও পানির অতিরিক্ত চাপে ঘরবাড়ি ভেসে যায়। একটু পরিকল্পিত ব্যবস্থা নিলেই স্থায়ী দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে এ উপজেলাবাসী।
রাইসুল ইসলাম জানান, বর্ষা এলে এক শ্রেণির জেলে মাছ ধরতে খালে বেড়া দেয়। খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ পানি প্রবাহে তীব্র প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। কোথাও কোথাও এমনভাবে বাঁধ দেয়া হয় যার কারনে খাল সংলগ্ন জমি থেকে পানিও নামতে পারে না। এতে তৈরি হয় জলাবদ্ধতার। ডুবে যায় গ্রামীণ জনপদ। 
রামগঞ্জ মডেল কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, বীরেন্দ্র খালের সংকট সমাধানে এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বৃষ্টির পানিতে পুরো রামগঞ্জ উপজেলা পরিণত হতে পারে একটি দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চলে। চাষাবাদ কমে যাবে, বাড়বে রোগবালাই- ক্ষতিগ্রস্থ হবে শিক্ষা ব্যবস্থা। ২০২৪ এর বন্যার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তিনি আরো বলেন মূলত নোয়াখালি, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও রামগঞ্জ উজানের পানিতে মানুষ পানিবন্ধী হয়নি। রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ খাল, পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল, সংযোগ খালগুলোর বেশিরভাগ বিভিন্নভাবে দখল হয়ে যাওয়ায় প্রবল বৃষ্টির কারনে এ এলাকা দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

সচেতন মহলের দাবি, রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ বীরেন্দ্র খালসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি খাল দখলমুক্ত করে নিয়মিত খনন ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই রামগঞ্জবাসী প্রতিবছরের এই বন্যা বা জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদ মোহাম্মদ রবিন শীষ বলেন, বীরেন্দ্র খাল খনন সময়ের দাবীতে পরিনত হয়েছে। ২০২৪ এর বন্যা বা জলাবদ্ধতায় উপজেলা প্রশাসন শতাধীক বাঁধ কেটেছে। বেহাল জালসহ খালে প্রতিবন্ধকতা অপসারনে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা, রামগঞ্জ সোনাপুর ও মৌলভী বাজারের ব্যবসায়ীদের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুই কিলোমিটার খালের ময়লার ভাগাড় পরিস্কার করা হয়েছে। খাল খননে ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে চাটখিল-রামগঞ্জ এবং কাটাখালি অংশের প্রায় ১৩ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে।

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd